স্কুলে সিনেমা প্রদর্শন নয় তিলাওয়াত শিক্ষা দিন!
হাবিবুর রহমান মিছবাহ || দেশীয় চলচ্চিত্রে দর্শক টানতে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে মাসে একদিন স্কুলে সিনেমা দেখাতে চায় তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সুস্থ বিনোদন ও শিক্ষামূলক কার্যক্রমও এগিয়ে যাবে বলে মনে করছে কমিটি। প্রশ্ন হলো সুস্থ বিনোদন কী? বিনোদন বলতে এমন ক্রিয়া-কলাপকে বুঝায়, যা মানুষকে আনন্দিত করে এবং প্রশান্তি এনে দেয়। অবসাদকে পেছনে ফেলে স্বচ্ছ ও প্রশান্ত হৃদয়ে নব উদ্যমে সত্য ও সুন্দরের পথে এগিয়ে যেতে বিনোদন মানুষকে সহযোগিতা করে।
সিনেমায় সুস্থ বিনোদনের কী আছে? খুন খারাপী থেকে শুরু করে বখাটেপনা, মিথ্যা, চুরি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, ধর্ষণ ইত্যাদি সবই আছে। এসমস্ত সিনেমা দেখে স্কুলের কোমলমতি শিশুরা কী ধরণের বিনোদন পাবে? হয়তো এর জবাব সংসদীয় কমিটিই দিতে পারবে। তবে আপাত দৃষ্টিতে চোখ বন্ধ করে বলে দেয়া যায়, স্কুলে সিনেমা প্রদর্শন মানে শিক্ষালয়গুলিতে আনুষ্ঠানিকভাবে চরিত্র অবক্ষয়ের কর্মসূচী চালু করা। কোনো সুস্থ মানুষের জন্য সিনেমা বিনোদন হতে পারে না। এর আগে পাঠ্যবইয়ে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রদের যৌনতা শিক্ষা দেয়ার একটি ঘৃণ্য অপচেষ্টা চালিয়েছিলো শিক্ষা মন্ত্রনালয়।
বুঝে আসছে না, একটি মহল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নৈতিকতার বদলে অপসংস্কৃতি, যৌনতা, অসভ্যতা আর চরিত্র হননের শিক্ষা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে কেনো? এরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সন্ত্রাসের আখড়া বানাতে মরিয়া! পৃথিবীর কতো শতাংশ স্কুলে সিনেমা প্রদর্শিত হয়? ৯২% মুসলমানের দেশে এ অপপ্রয়াস কেনো? আজ দেশের প্রতিটি মুসলিম নাগরিকের এ প্রশ্ন। সংসদীয় কমিটি আরো বলেছে, চলচ্চিত্রের মাধ্যমে শিক্ষামূলক কার্যক্রমও এগিয়ে যাবে। শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে যেতে সিনেমার ভূমিকা কি তা স্পষ্ট করেনি তারা।
সিনেমা কখনো সুস্থ বিনোদন হতে পারে না। সিনেমায় যে শিক্ষা দেয়া হয় সেটি সুস্থ সমাজের জন্য কল্যাণকর নয়। যেমন সম্ভ্রান্ত পরিবারের একটি মেয়ে বংশের মুখে চুনকালি মেখে একজন রিক্সাওয়ালার হাত ধরে পালিয়ে গেলো! এটিকে সুস্থ বিনোদন বলবেন? কী শিক্ষা আছে এখানে? সংসদীয় কমিটির কোনো সদস্য তার মেয়ের ক্ষেত্রে এটি মেনে নিবেন কি? মানেন বা নাই মানেন, প্রেমাভিনয়, ধর্ষণ, ভিডিও ব্ল্যাকমেল, পরকিয়া ইত্যাদি এই সিনেমারই ফসল। নায়ক-নায়িকা ও মডেল তারকাদের কয়জনের চরিত্র শুদ্ধ আছে? একেকজনের একাধিক প্রেম, বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ক, বিয়ে অস্বীকার, সংসারে ভাঙ্গন তো এখন দৈনিকের খবর।
বরং আসুন! স্কুলে দৈনিক পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের ছবক জারি করি। কুরআন মানুষকে নৈতিকতা শেখায়। চলতে শেখায় সত্যের পথে। ঐশী, বদরুল, পরিমলরা কিন্তু স্কুলে পড়েও নৈতিকতা রক্ষা করতে পারেনি। কেননা ওরা কুরআন থেকে দূরে তাই। সিনেমা পেলে এদের চরিত্র আরো নষ্ট হবে। অথচ উপরোল্লেখিত কোনো অন্যায়ের সাথে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সংশ্লিষ্টতা পাবেন না। কেননা ওদের মাঝে রয়েছে কুরআনের আলো। কুরআন তিলাওয়াতেই ওদের মনে প্রশান্তি। ফলে নৈতিকতা ও নির্মল আদর্শের আলোকবর্তিকা একমাত্র ওরাই।
ওরাও খেলা-ধুলা, প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে। তবে তা সু-শৃংখল ও ভদ্রভাবে এবং নির্দিষ্ট সময়ে। তাই সুস্থ বিনোদন, মনের প্রশান্তি ও নৈতিকতার শিক্ষা নিতে হলে হয়তো ওদের কাছে যাও নয়তো স্কুলে ওদের কার্যক্রম ফলো করো। বাধ্যতামূলক দৈনিক শুরু করো পবিত্র কুরআনের ছবক।
No comments