নিস্তব্ধ শহর : সুফিয়ান ফারাবী
রাস্তা-ঘাটে গাড়ির প্যাঁ পো শব্দ হবে।লাখো মানুষের পদচারণায় শহর দলিত হবে । সবাই ছুটবে তাদের কর্মস্থলের দিকে। থাকবে সবার মাঝে আগে যাওয়ার প্রোতিযোগিতা এবং এক প্রকার অস্থিরতা । সবাই তাড়াহুরা করবে,সবাই ব্যস্ত।
গাড়ি বাম্পার টু বাম্পার জ্যাম লেগে থাকবে। যেন কখন ছুটবার নয়। গাড়ির ভেতর বসে থাকা মানুষগুলো থাকবে মুর্তির মত। চুপচাপ। তাদের শরীর বিবশ,
তাদের মুখ বিরস,তারা ক্লান্ত।চেয়ে থাকবে
চাতক পাখির মত।একটাই আশা কখন সিগনাল ছাড়বে। সকলের দৃষ্টি সিগনাল লাইটের দিকে। এক প্রকার থমথমে ভাব।
এরকমই হওয়ার কথা ছিল ঢাকার অবস্থা।
কিন্তু আজ তার কিছুই নেই। না আছে কর্মস্থলগামী মানুষের ভীড়। না আছে যানবাহনের ভীড়। না আছে তাদের প্রোতিযোগিতা। না আছে অস্থিরতা। না আছে অবসতা। না আছে বিবশতা।
কারন ট্রাফিক জ্যাম নেই। মানুষের ভীড় নেই।মানুষ চলছে খোশ মেজাজে। গাড়ি চলছে তার সর্বোচ্ছ গতিতে। আজ যেন থামাবার কেউ নেই। আজ তারা স্বাধিন।
গাড়ির ভেতরের মানুষগুলো বেশ হাসিমুখি
।কোন চিন্তা নেই।কোন পেরেশানি নেই।
মাঝে মাঝে জানালা খুলে বাহিরের অবস্থা দেখছে। দেখছে মানবশূন্য খোলা শহর।
আজ আর তাদেরকে চাতক পাখির মত করে চেয়ে থাকতে হচ্ছে না সিগনাল লাইটের দিকে।
আমি এ শহরেই থাকি।এটাই আমার বাসস্থান। এটাই আমার গ্রাম, এটাই আমার শহর। আমি শহর দেখতে পছন্দ করি।কিন্তু আমি যেই রুমে থাকি সে রুম থেকে শহর অত ভাল করে দেখা যায় না। বলতে পারেন আবদ্ধ রোম।তবে কোন রকম চলে।আমি বসে বসে নিস্তব্ধ শহর দেখছি। মনে খুব বিষন্মতা কাজ করছে।
তবে তার কারন বেশ সাধারন। যেহেতু এটাই আমার শহর ও গ্রাম তাই আমি এখানেই আছি কোথাও যাই নি। কিন্তু আমার বাল্যবন্ধুরা সবাই নিজ নিজ গ্রামে।
তারা এশহরে নেই।সবাই চলে গেছে।
নাড়ীর টানে, মাতৃভূমির টানে। তাই আমি ভীষন নিঃসঙ্গতায় ডুবছি, একাকিত্বে ভুগছি।
হয়ত দুএক দিনের মধ্যেই আবারো সবাই ফিরে আসবে।আবারো সবকিছু সাধারন হবে।কিন্তু আমার কাছে এ দুএকদিনই অনেক লম্বা মনে হচ্ছে,দীর্ঘ মনে হচ্ছে।
তাই বারবারই নিজের অজানতেই মন বলছে,,,,,,
""এ সময় ঠুনকো,নয় ফুরাবার মত
এ সময় কস্টের, ঘেরা দুঃখ বেদনা যত
No comments