পর্বতকে হার মনানো ঈমান :আরিফুল কাদের
আরিফুল কাদের
মানব জীবনে আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রথম দার ঈমান। যার আকিদাতে বিন্দু মাত্র
সন্দেহ আছে সে কখনো মুসলিম দাবি করতে পারে না। আর আকিদা বিশুদ্ধ করতে
মহাগ্রন্থ আল কোরআনের পাশাপাশি হাদীসেরও তুলনা করা যায় না। তাই সর্বকালের
সর্বশ্রেষ্ঠ মহপুরুষ বিশ্বনবী সা. এর আনিত বিধি-বিধান মান্য করা ব্যতীত
পূর্ণ মু’মিন হওয়া যায় না। তাই কোরআনে কারীমে এসেছে- ” ওই কিতাবটি প্রকৃত
কিতাব, এতে কোনো প্রকার সন্দেহ নেই। যা মুত্তাকিদের জন্য পথপ্রদর্শক।
যারা অদৃশ্য বিষয়ের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে, যথাযথভাবে নামাজ প্রতিষ্ঠা
রাখে, আমি তাদের যে রিজিক দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে, যারা বিশ্বাস
স্থাপন করেছে এই কিতাবকে যা আপনার ওপর অবতীর্ণ হয়েছে এবং সেই কিতাবের ওপর
যা আপনার পূর্বে অবতীর্ণ হয়েছে এবং তারা আখেরাতের ওপর নিশ্চিত বিশ্বাস
রাখে। তারাই স্বীয় প্রতিপালকের পক্ষ থেকে হেদায়েতের ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং
তারাই সফলকাম”। (সুরা : বাকারা, আয়াত-২ থেকে ৫) সেজন্যই আল্লাহকে এবং
তাঁর আখিরাতের ভয়ে তাঁরই যাবতীয় নির্দেশ পালন এবং নিষেধ বর্জনে জীবন
বিনিময় হলেও করতে বাধ্য। কিন্তু এসব হুকুম পালন হতে বিরত রেখে
(পারিবারিক, সামাজিক ও ব্যক্তিগত) জোর পূর্বক অনৈসলামিক বা মানবতাহীন
কাজে যে চেষ্টা চালায়। সেতো মুসলিম বলে পরিচয় দেয়া মানে আব্দুল্লাহ ইবনে
উবাই এর শিষ্য ছাড়া আর কি? তাঁদের শাস্তির ব্যাপরে কোরআনে পাকে এসেছে- ”
মুনাফিকের স্থান জাহান্নামের সর্ব নিম্নস্তরে”। (সূরা আন নিসা ১৪৫) এবার
একজন প্রকৃত ঈমানদার নারীকে তার বাবা(আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইর উত্তরসুরী)
কর্তৃক নির্যাতনের বর্ণনা তুলে ধরা হলো। যা পাহাড়কেও হার মানিয়েছে।
নাহিদা; রাজধানী কাবুলের রাবেয়া বলখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির
ছাত্রী। ছোট বেলায় মা মারা যাওয়ায় অনেকটা ধর্মভীরু ও নম্র প্রকৃতির হয়ে
উঠে। রূপে গুনে যেমন ছিল মন মাতানো। তেমনি ছাত্রী হিসেবেও ছিল মেধাবী।
তাঁর বাবা বেঈমান সোভিয়েত বাহিনীর পা ছাঁটা একটা গেলাম হওয়ায় নাহিদের এ
ধর্মভীরুত্বকে হতাহত করে দেয়। প্রায়ই সোভিয়েত সেনারা নাহিদের বাসায়
বেড়াতে আসতো। একদিন কোন এক কারণে রুশ সৈন্য তাকে দেখে ফেলে। সাথে সাথে ঐ
রুশ সৈন্যের মনে কু-মতলব জেগে উঠে। নাহিদের বাবা ফরিদ খানকে বললঃ তোমার
মেয়ের নাচ দেখতে হবে একদিন। ফরিদ খান কেন কাবুলের সরকার প্রধানের ‘না’
বলার দুঃসাহস ছিলনা রুশ সৈন্যদের সামনে। তাই সে নম্র স্বরে বললঃ নাহিদ;
খুব লাজুক মেয়ে। সে কিছুতেই আপনাদের ক্লাবে এসে নাচতে রাজী হবে না। রুশ
কর্মকর্তা ধমকের স্বরে বললঃ তুমি না কমিউনিস্ট? ফরিদ খান বললঃ জ্বি
অবশ্যই। তাহলে কথা কিসের? নিয়ে এসো তোমার কন্যাকে। যাহোক, বাসায় গিয়ে
নাহিদাকে কোন ক্রমে রাজী করতে না পেরে জোরপূর্বক নিয়ে গেল সোভিয়েত
বাহিনীর ক্লাবে। মেয়েকে রেখে বিধর্মীদের দালাল বাবা ফরিদ খান বাহিরে চলে
আসে। রুশ সৈন্যরা নাহিদকে কোনভাবে নাচতে রাজী করাতে না পেরে শুরু করলো
নির্যাতনের স্ট্রিম রুলার। গায়ের কাপড় ছিঁড়ে বারবার জলন্ত সিগারেটের
চ্যাকা দিতে লাগল। নিজের (সৈন্যের) নাম ছুরির খোঁচায় লেখে নাহিদের শরীর
ক্ষত-বিক্ষত করে ফেলে। তবুও নাহিদ পাহাড়ের মত দৃঢ় থেকে; রুশ সৈন্যদের
সামনে নিজের ঈমানকে লাঞ্চিত করেন নি। অর্থাৎ নেচে নেচে গান গায়নি।
সারারাত নির্যাতনে শিকার হয়ে শেষ রাতে এই মুসলিম বোন দুনিয়া থেকে বিদায়
(শহিদ) হয়ে গেলেন। [আল্লাহ তাঁর মাকাম আরো উচ্চস্তরে করে দিন) এটাই হল
ঈমানের প্রতি একনিষ্টতা। যা ব্যক্তিকে দুনিয়া থেকে সোজা জান্নাতে নিয়ে
যায়।
সর্বশেষ বলতে হয়, ঈমানকে ঠিকে রাখতে বেঈমানদের পদাঙ্ক অনুসরণ করা যাবে
না। কেননা, এসব নাচ-গান সম্পর্কে ফাতোয়ায়ে শামীতে আছে, গান বাদ্যের আওয়াজ
শোনা পাপ, তাতে বসা ফাসেকী এবং উল্লাহ করা কুফরী। [বায়যাবীর ফাতোয়ায়ে
শামী ৬ খণ্ড ৩৪৮-৩৪৯ পৃ.]
সন্দেহ আছে সে কখনো মুসলিম দাবি করতে পারে না। আর আকিদা বিশুদ্ধ করতে
মহাগ্রন্থ আল কোরআনের পাশাপাশি হাদীসেরও তুলনা করা যায় না। তাই সর্বকালের
সর্বশ্রেষ্ঠ মহপুরুষ বিশ্বনবী সা. এর আনিত বিধি-বিধান মান্য করা ব্যতীত
পূর্ণ মু’মিন হওয়া যায় না। তাই কোরআনে কারীমে এসেছে- ” ওই কিতাবটি প্রকৃত
কিতাব, এতে কোনো প্রকার সন্দেহ নেই। যা মুত্তাকিদের জন্য পথপ্রদর্শক।
যারা অদৃশ্য বিষয়ের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে, যথাযথভাবে নামাজ প্রতিষ্ঠা
রাখে, আমি তাদের যে রিজিক দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে, যারা বিশ্বাস
স্থাপন করেছে এই কিতাবকে যা আপনার ওপর অবতীর্ণ হয়েছে এবং সেই কিতাবের ওপর
যা আপনার পূর্বে অবতীর্ণ হয়েছে এবং তারা আখেরাতের ওপর নিশ্চিত বিশ্বাস
রাখে। তারাই স্বীয় প্রতিপালকের পক্ষ থেকে হেদায়েতের ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং
তারাই সফলকাম”। (সুরা : বাকারা, আয়াত-২ থেকে ৫) সেজন্যই আল্লাহকে এবং
তাঁর আখিরাতের ভয়ে তাঁরই যাবতীয় নির্দেশ পালন এবং নিষেধ বর্জনে জীবন
বিনিময় হলেও করতে বাধ্য। কিন্তু এসব হুকুম পালন হতে বিরত রেখে
(পারিবারিক, সামাজিক ও ব্যক্তিগত) জোর পূর্বক অনৈসলামিক বা মানবতাহীন
কাজে যে চেষ্টা চালায়। সেতো মুসলিম বলে পরিচয় দেয়া মানে আব্দুল্লাহ ইবনে
উবাই এর শিষ্য ছাড়া আর কি? তাঁদের শাস্তির ব্যাপরে কোরআনে পাকে এসেছে- ”
মুনাফিকের স্থান জাহান্নামের সর্ব নিম্নস্তরে”। (সূরা আন নিসা ১৪৫) এবার
একজন প্রকৃত ঈমানদার নারীকে তার বাবা(আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইর উত্তরসুরী)
কর্তৃক নির্যাতনের বর্ণনা তুলে ধরা হলো। যা পাহাড়কেও হার মানিয়েছে।
নাহিদা; রাজধানী কাবুলের রাবেয়া বলখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির
ছাত্রী। ছোট বেলায় মা মারা যাওয়ায় অনেকটা ধর্মভীরু ও নম্র প্রকৃতির হয়ে
উঠে। রূপে গুনে যেমন ছিল মন মাতানো। তেমনি ছাত্রী হিসেবেও ছিল মেধাবী।
তাঁর বাবা বেঈমান সোভিয়েত বাহিনীর পা ছাঁটা একটা গেলাম হওয়ায় নাহিদের এ
ধর্মভীরুত্বকে হতাহত করে দেয়। প্রায়ই সোভিয়েত সেনারা নাহিদের বাসায়
বেড়াতে আসতো। একদিন কোন এক কারণে রুশ সৈন্য তাকে দেখে ফেলে। সাথে সাথে ঐ
রুশ সৈন্যের মনে কু-মতলব জেগে উঠে। নাহিদের বাবা ফরিদ খানকে বললঃ তোমার
মেয়ের নাচ দেখতে হবে একদিন। ফরিদ খান কেন কাবুলের সরকার প্রধানের ‘না’
বলার দুঃসাহস ছিলনা রুশ সৈন্যদের সামনে। তাই সে নম্র স্বরে বললঃ নাহিদ;
খুব লাজুক মেয়ে। সে কিছুতেই আপনাদের ক্লাবে এসে নাচতে রাজী হবে না। রুশ
কর্মকর্তা ধমকের স্বরে বললঃ তুমি না কমিউনিস্ট? ফরিদ খান বললঃ জ্বি
অবশ্যই। তাহলে কথা কিসের? নিয়ে এসো তোমার কন্যাকে। যাহোক, বাসায় গিয়ে
নাহিদাকে কোন ক্রমে রাজী করতে না পেরে জোরপূর্বক নিয়ে গেল সোভিয়েত
বাহিনীর ক্লাবে। মেয়েকে রেখে বিধর্মীদের দালাল বাবা ফরিদ খান বাহিরে চলে
আসে। রুশ সৈন্যরা নাহিদকে কোনভাবে নাচতে রাজী করাতে না পেরে শুরু করলো
নির্যাতনের স্ট্রিম রুলার। গায়ের কাপড় ছিঁড়ে বারবার জলন্ত সিগারেটের
চ্যাকা দিতে লাগল। নিজের (সৈন্যের) নাম ছুরির খোঁচায় লেখে নাহিদের শরীর
ক্ষত-বিক্ষত করে ফেলে। তবুও নাহিদ পাহাড়ের মত দৃঢ় থেকে; রুশ সৈন্যদের
সামনে নিজের ঈমানকে লাঞ্চিত করেন নি। অর্থাৎ নেচে নেচে গান গায়নি।
সারারাত নির্যাতনে শিকার হয়ে শেষ রাতে এই মুসলিম বোন দুনিয়া থেকে বিদায়
(শহিদ) হয়ে গেলেন। [আল্লাহ তাঁর মাকাম আরো উচ্চস্তরে করে দিন) এটাই হল
ঈমানের প্রতি একনিষ্টতা। যা ব্যক্তিকে দুনিয়া থেকে সোজা জান্নাতে নিয়ে
যায়।
সর্বশেষ বলতে হয়, ঈমানকে ঠিকে রাখতে বেঈমানদের পদাঙ্ক অনুসরণ করা যাবে
না। কেননা, এসব নাচ-গান সম্পর্কে ফাতোয়ায়ে শামীতে আছে, গান বাদ্যের আওয়াজ
শোনা পাপ, তাতে বসা ফাসেকী এবং উল্লাহ করা কুফরী। [বায়যাবীর ফাতোয়ায়ে
শামী ৬ খণ্ড ৩৪৮-৩৪৯ পৃ.]
লেখকঃ নির্বাহী পরিচালক, পানাহার স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা(প্রাইভেট),
পানাহার, জয়কা, করিমগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ
পানাহার, জয়কা, করিমগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ
No comments